• সব মধুর বৈশিষ্ট্য এক না। কোনটার রং লাল,কালো আবার সাদা। কোন মধু জমে যায় আবার কোনটা জমে না। একই মৌমাছি কিন্তু ফুলের ভিন্নতার কারণে মধুর বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হয়। সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য এই মধু খুবই মিষ্টি। রং হবে হালকা হলুদ বর্ণের। তবে এই মধুর সবচেয়ে বড় যে বৈশিষ্ট্য, তা আমাদের অনেকের জানা নেই। — সরিষা ফুলের মধু শীতকালে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই জমে যায়, আর গরমের সময় জমতে একটু দেরি হয়, কয়েক সপ্তাহ বা ২/৩ মাস বা এর চেয়ে একটু বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তবে জমবেই। যদি না জমে, তবে বুঝতে হবে মধুতে সমস্যা আছে। এই জমা মধু উন্নত বিশ্বে ক্রিম হানি বলে পরিচিত। বোতলে রাখা সরিষা ফুলের মধুর পুরোটাই জমে যেতে পারে অথবা বেশিরভাগ অংশ বা আংশিক জমে যাবে। সরিষা ফুলের মধু জমে অনেকটা ঘিয়ের রূপ ধারণ করে। জমে যাওয়া মধু মোলায়েম, নরম, ছোট ছোট দানাদার হবে। মধু জমে যায় কেন? অনেকে সরিষা মধু জমাকে ভুল বোঝেন। তারা একে ভেজাল মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মধু জমে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তরল থেকে দানাদার অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন (granulation) বা কঠিন মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু যত দ্রুত জমে, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত জমে না। প্রতিটি মধুর স্ফটিকায়নের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। জমে যাওয়ায় মধুর রং বদলে যায়, তরল থেকে দানাদার হয়ে যায় কিন্তু মধুর গুণগত মান কমে না। সাধারণত সরিষা মধু তে ৭০% এর বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। তার মানে স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। চিনির মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। একারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়। পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ স্ফটিক আকারে জমতে থাকে। আর দ্রবণটি আস্তে আস্তে সাম্যাবস্থার দিকে যায়। এছাড়া আরো কিছু নিয়ামক রয়েছে যা স্ফটিকায়ন শুরু করা, তরান্বিত করা ও স্লথ করায় ভূমিকা রাখে। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ছাড়া মধুর অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট উপাদান, এমাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ, এসিড ইত্যাদিও স্ফটিকায়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এছাড়া ধুলা, পরাগরেণু, মোমের কণা বা বহিরাগত স্ফটিকের উপস্থিতিতেও স্ফটিকায়ন তরান্বিত হতে পারে। সরিষা ফুলের মধু যেভাবে বাড়িতে রিফাইন করবেনঃ- র’ মধু / ক্রিম হানি অথবা জমে থাকা মধু যে যেই নামে চিনুক না কেন সহজে কিন্তু এই মধু বাড়িতেই রিফাইন বা প্রসেস করা সম্ভব। একটি পাত্রে প্রয়োজন মতো মধু নিন। এরপর এমন একটি পাত্র নির্বাচন করুন যেটা মধুর পাত্র থেকে বড় এবং আগুনের উপরে দেওয়া যাবে। অতঃপর বড় পাত্রটিতে কিছুটা পরিমাণ পানি নিন এবং সেই পানির মধ্যে মধুর পাত্রটি বসিয়ে দিন খেয়াল রাখবেন যেন মধুর পাত্রের মধ্যে বড় পাত্রের পানি ঢুকে না যায় এরপর বড় পাত্রটি মধুর পাত্রসহ চুলার আগুনে বসিয়ে দিন। গ্যাস ফ্লো বা চুলার আগুন যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে মিডিয়াম আচে ৩০-৩৫ মিনিট জ্বাল দিন এবং শুরু থেকেই মধু বড় চামচ দিয়ে নাড়তে থাকবেন যেন তাপে মধু গুলো পাত্রের গায়ে লেগে না যায়। একটা পর্যায় মধুর পাত্রের উপরে সাদা ফেনা উঠে যাবে এবং তলার দিকে লালচে রং ধারণ করবে। মধুর রং লালচে হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন এবং আলতো করে উপরের সাদা ফেনা সরিয়ে নিন, এরপর ঠাণ্ডা করে বোতল জাত করে রাখলে কখনোই আর মধু জমবে না এবং এক থেকে দেড় বছর রেখে খেতে পারবেন। ✅ ভালো খান সুস্থ থাকুন হালাল ফুড সার্ভিসের সাথেই থাকুন।       ~Enjoy The Real Taste~ 

    ✴︎

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *